ব্যবসায়ীক দৃষ্টিকোণ থেকে চিন্তা করলে এই কথা অনস্বীকার্য যে, কার্যকরী সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট একটি সফল ব্যবসার মেরুদণ্ড। যে কোম্পানির পণ্য ব্যবস্থাপনা ও সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট যত বেশি কার্যকরী হবে, তত কম সময়ে এবং কম খরচে বেশি প্রোডাক্ট ডেলিভারি দেয়া যাবে এবং গ্রাহকের আস্থাও বাড়বে। অর্থাৎ সামগ্রিক উন্নতির গ্রাফ হবে ঊর্ধ্বমুখী। কিন্তু গতানুগতিক যে নিয়মে সাপ্লাই চেইন ও ডেলিভারি সিস্টেম চলছে, তাতে মনেহয় কী যেন নেই, কিছু একটা মিসিং। কিছু একটা আছে যার অভাবে আরও সহজে সাপ্লাই চেইন এবং ডেলিভারি সিস্টেম ম্যানেজ করা যাচ্ছে না!
অনেকেই এখন থার্ড পার্টি কুরিয়ার কিংবা ডেলিভারি সার্ভিসের উপর নির্ভর করে প্রোডাক্ট ডেলিভারি করে থাকেন। এই কুরিয়ার বা ডেলিভারি কোম্পানিগুলোকেও বেশির ভাগ সময় ডেলিভারি ডিস্ট্রিবিউশন এবং ডেলিভারি সম্পন্ন করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে! সমাধান তো পাওয়া যাচ্ছে না!
সমস্যাগুলো আরও একটু কাছ থেকে দেখা যাক
এমন একটা কোম্পানির কথা ভাবা যাক, যে কোম্পানি তাদের উৎপাদিত পণ্য পরিবহণের পর, ম্যনুফেকচারিং করে, গ্রাহককে বা ডিস্ট্রিবিউটরকে ডেলিভারি দিয়ে থাকে। প্রথম দিকে ঝামেলা ছাড়াই পন্য ডেলিভারি দিতে পারলেও, চলমান পরিস্থিতি এবং টেকনোলজির উপর মানুষের নির্ভরতা বেড়ে যাওয়ায়, তাদের হোম ডেলিভারির অর্ডার বেড়ে গেল কয়েক গুন! বেশি অর্ডার পাওয়ার ফলে তাদের খুশিই হবার কথা ছিল, কিন্তু বিপত্তি হল অন্য এক জায়গায়। একই দিনে এত ডেলিভারি পড়লো যে ডেলিভারি ও সাপ্লাইচেইন ম্যানেজমেন্ট হয়ে উঠলো আরো বেশি চ্যালেঞ্জিং!
এত বেশি অর্ডার এর সঠিক লিস্টিং, ডেলিভারি অপারেশন, ডিস্ট্রিবিউশন এবং ডেলিভারি ট্র্যাক করতে গিয়ে কোম্পানিটি দেখলো এতে করে সময় তো বেশি লাগছেই, অন টাইম ডেলিভারি মিস হচ্ছে, ডেলিভারি ম্যান, ড্রাইভার, গ্রাহকের সাথে কথা বলতে গিয়ে খরচও বেড়ে যাচ্ছে! অথচ সাপ্লাই চেইনে কস্ট মিনিমাইজ করা ছাড়া রেভিনিউ বাড়ানোও বেশ কঠিন কাজ!
দেখে নেয়া যাক সাপ্লাই চেইন ম্যানেজ করতে গিয়ে কোম্পানিটি কী কী সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।
পণ্য পরিবহণ / প্রোডাক্ট ডেলিভারি
পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে দুই রকম ঘটনা ঘটে।
১. ম্যানুফেকচারিং এর আগে উৎপাদিত পণ্য পরিবহণ
২. ম্যানুফেকচারড পণ্য গ্রাহকের কাছে পৌঁছানো
এই দুই ধাপেই সাপ্লাইচেইন ম্যানেজমেন্ট নিয়ে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ এসে দাঁড়ালো কোম্পানির সামনে।
পণ্য পরিবহণ/ডেলিভারির স্থান-কাল-পাত্র
ম্যানুফেকচারিং এর আগে বা পরে, যখনই হোক না কেন, পন্য পরিবহণ ও ডেলিভারির জন্য, পন্য পরিবহণের এরিয়া, পরিবহণের যানবাহন এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত ড্রাইভার, ডেলিভারি পারসন খুবই গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ।
১. এরিয়াঃ কোন জায়গা থেকে পন্য নিয়ে আসতে হবে এবং কোথায় ডিস্ট্রিবিউট বা ডেলিভারি করতে হবে সেটা করতে অনেক বেশি শ্রমের দরকার পড়ছে।
২. সময়ঃ নির্ধারিত এরিয়া থেকে কোন সময়ে পণ্য নিয়ে আসতে হবে এবং কোন ডিলার বা কাস্টমারের কাছে কোন সময়ের মধ্যে পণ্য পৌছাতে হবে সেই হিসেব রাখা এবং মনিটর করা দুরূহ হয়ে পড়ছে। কিন্তু এটাও মনে রাখতে হবে সময় খুব মূল্যবান। সময় মতো প্রোডাক্ট ডেলিভারি করতে না পারলে তা কোম্পানির জন্য ক্ষতির কারণ।
৩. ড্রাইভার এবং ডেলিভারি পারসনঃ পণ্য পরিবহণের এরিয়া এবং সময় জানা হয়ে গেলে, পণ্য পরিবহণ বা ডেলিভারি কে করবে এবার সেটা নিয়ে কাজ করতে হয়। পণ্য ডেলিভারির দায়িত্ব ভাগ করে দিতে গিয়ে দেখা যায়, কোন কোন ডেলিভারি পারসন নির্দিষ্ট এরিয়া ও সময়ের মধ্যে পণ্য ডেলিভারি দিতে অপারগতা জানায়। অনেক সময়, যথেষ্ট সংখ্যক ডেলিভারি পারসন পাওয়াও কষ্টকর হয়ে ওঠে।
চিরাচরিত সাপ্লাই চেইন কাঠামো
১. ডেলিভারি অর্ডার লিস্টিং — কোথায় কোন সময়ে কোন পণ্য ডেলিভারি দিতে হবে, সেসব লিস্ট করতে হয়। এক্সেল শিটে একটা একটা করে অর্ডার ইনপুট দিয়ে গিয়ে চলে যায় অনে সময়।
২. ডেলিভারি ডিস্ট্রিবিউশনঃ এত সময় ব্যয় করে একটা ডেলিভারি শিট রেডি করার পর ভাবতে হয় কোন ডেলিভারি পারসন কোন এরিয়াতে ডেলিভারি দেবে সেগুলো খুঁজে বের করতে হয়। এই কাজ করতে গিয়ে একটার পর একটা ফোন কল আর এস এম এস করতে হয়। এখানেও সময় চলে যাচ্ছে, খরচ বেড়ে যাচ্ছে।
৩. ডেলিভারি ম্যানেজমেন্ট এবং ট্র্যাকিংঃ সময়ের কথা যেহেতু চলেই আসলো, কোন ডেলিভারি আগে আর কোন ডেলিভারি পরে যাবে সেগুলো নির্ধারণ এবং জানিয়ে দেয়াও বেশ চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার। টাইম ম্যানেজমেন্ট মিস হলে মিস হয়ে গেলে কাস্টমার স্যাটিসফেকশন ব্যহত হতে পারে।
মাঝপথে আরও ডেলিভারি/ডিস্ট্রিবিউশন অর্ডার
মাথার ঘাম পায়ে ফেলে আগের দিনের ডেলিভারি অর্ডার সামলাতে সামলাতে চলে আসছে আরও অর্ডার। কিন্তু এতক্ষণে হাতে থাকা প্রায় সব ডেলিভারি পারসন বা ডেলিভারি ভ্যান বের হয়ে গেছে প্রডাক্ট ডেলিভারি কিংবা ডিসস্ট্রিবিট/পিক-আপ করতে। নতুন অর্ডার কীভাবে সম্পন্ন করা হবে সেজন্য আবার লিস্ট করতে হয়, হুট করে ডেলিভারি পারসন পাওয়া যাবে কিনা ও তাদের লোকেশন নিয়ে চিন্তা করতে হয়। আবার কল করতে হয় এস-এম-এস করতে গিয়ে বিপত্তি ঝক্কি ঝামেলার শেষ নেই! অন্যদিকে কাস্টমার বসে থাকে তার প্রডাক্ট হাতে পাবার আশায়।
জীবন শেষ হয়ে যাচ্ছে তাও যেন কাজ শেষ হচ্ছেনা!
সারাদিনের কর্মব্যাস্ত দিনের শেষেও দেখা যাচ্ছে অনেক কাজ বাকি থেকে যাচ্ছে। থাকবেই বা না কেন! কার্যকরী সিস্টেম এবং কর্মদক্ষতার অভাবে অনেক ডেলিভারি মিস হচ্ছে, সেগুলোকে আবার ডেলিভারি প্রসেসে নিয়ে আসা, গ্রাহকের অভিযোগ নোট ডাউন করা, তাদের কাঙ্ক্ষিত ডেলিভারি টাইম ম্যানেজ করা নিয়ে আবারো নতুন করে কাজ করতে হয়। গ্রাহকের চাহিদা মেটাতে না পারলে ডেলিভারি বা সেলস ড্রপ হবার সম্ভাবনা বেড়ে যাচ্ছে, পণ্য ফেরত আসছে। ম্যানুফেকচারিং বা প্রসেসিং এর আগে পণ্য আসতে দেরি হলে পিছিয়ে যাচ্ছে প্রোডাকশন!
কীভাবে হবে সাপ্লাই চেইন এর সমাধান?
প্রযুক্তির উন্নতি দখল করে নিচ্ছে আমাদের জীবন। বর্তমান সময়ের কথা চিন্তা করলেই ব্যাপারটা চোখের সামনে আরও পরিস্কার হয়ে ওঠে। মানুষের মাঝে ঘরে বসেই সব ধরণের পণ্য ও সেবা পাবার একটা ট্রেন্ড শুরু হয়েছে। খাবার থেকে শুরু করে নেইল কাটার সবই এখন ঘরে বসেই পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা গ্রাহকের মনে। কাস্টমার তো অর্ডার দিয়ে বসে থাকে ডেলিভারির আশায়। কিন্তু যারা প্রোডাক্ট উৎপাদন, ডিস্ট্রিবিউশন, সেলস এবং ডেলিভারি ম্যানেজ করে তাদের কাজটা কিন্তু মোটেই সহজ নয়! কারণ তাদেরকেও এই ট্রেন্ডের সাথে তাল মিলিয়ে গ্রাহককে তার দোরগোড়ায় পণ্য ও সেবা পৌঁছে দিতে হবে। তাই গতানুগতিক পথ থেকে বেরিয়ে এসে, সাপ্লাই চেইন এবং ডেলিভারি সিস্টেমকে আরও উৎকৃষ্ট এবং কার্যকরী করে গড়ে তুলতে এখানে দরকার সঠিক প্রযুক্তির প্রয়োগ! যা আসলে গতানুগতিক সিস্টেমের মধ্যে নেই। এমনই এক প্রযুক্তি নিয়ে আসছে কনভেন্স অ্যাপ!
কীভাবে সাপ্লাই চেইন এবং ডেলিভারি সিস্টেমকে আপনার হাতের মুঠোয় নিয়ে আসতে পারে তার জন্য চোখ রাখুন পরবর্তী পোস্টে!
কনভেন্স অ্যাপ সম্পর্কে আরও জানতে চোখ রাখুন আমাদের ফেসবুক পেইজে ও ব্লগে। অথবা সরাসরি আমাদের সাথে কথা বলতে কল করুনঃ +8801894437373 নাম্বারে। প্লে স্টোর থেকে অ্যাপটি ডাউনলোডও করতে পারেন।
কনভেন্স অ্যাপটি ডাউনলোড করতে ক্লিক করুন এখানে